সময়ের সাত রঙ — সপ্তাহের সাত বার
![]() |
MyAstrology |
‘অভি’ নামের এক তরুণ প্রতিদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করে—“আজকের দিনটা কেমন যাবে?” রবিবারে সূর্যদেবের তেজ তার মনে এক অদ্ভুত উজ্জ্বলতা জাগায়। রবিবার মানে আত্মবিশ্বাস, ইগো, পিতৃপ্রভাব। অভি ভাবতে থাকে—সে কি নিজের ভেতরের আলো দেখতে পাচ্ছে? সে একজন জ্যোতিষীর পরামর্শ নেবার কথা ভাবে। আবার রবিবার মানে নিজের অহং কে নিয়ন্ত্রণে আনা, তাই সে নিজেকে জিজ্ঞেস করে— “আমার ইচ্ছেটাই কি ভাগ্য?” জ্যোতিষ দর্শন তার মনে প্রশ্ন তোলে।
সোমবার আসে চাঁদের আলো নিয়ে। চন্দ্র মানে মা, মানসিকতা, পরিবর্তন। অভির মনের ভেতর স্মৃতিরা জেগে ওঠে— ছোটবেলায় মা যেভাবে সোমবারের উপবাস করতেন, তার ভেতরে সেই নম্রতা জাগে। সে বুঝতে শেখে মন নিয়ন্ত্রণই জীবন নিয়ন্ত্রণ। অভি ভাবে, কোনো অভিজ্ঞ জ্যোতিষ হয়তো এই মানসিক ভাঙচুরের ব্যাখ্যা দিতে পারতেন। সোমবার তার জন্য হয় ধ্যান ও অনুভবের দিন।
মঙ্গলবারে মঙ্গল গ্রহ আসে যুদ্ধে, কর্মে ও সাহসে। অভি সেই দিন নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকার চেষ্টা করে। সে মনে করে, তার কর্মরেখা কি সত্যিই মঙ্গলের শক্তি বহন করে? সে অল্পস্বল্প রাগী—এটা কি মঙ্গলের প্রভাব? মঙ্গল তাকে শেখায়—সাহস মানেই গর্জন নয়, বরং ভেতরে শক্ত থাকা। Palm Reading দেখে সে বুঝতে চায়, তার কর্নধার রেখা কেমন।
বুধবারে বুধ গ্রহ—যুক্তি, ব্যবসা, বিশ্লেষণ। অভি সকালে অফিস যাওয়ার সময় একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখে থেমে যায়। ‘বুদ্ধি যদি শান্ত না থাকে, যুক্তি গুম হয়ে যায়।’—এই কথাটি তার মনে দাগ কাটে। বুধবারে সে নিজের মনন বিশ্লেষণ করে। সে উপলব্ধি করে—যুক্তি মানে শুধু তথ্য নয়, তা সময়োচিত উপলব্ধি।
বৃহস্পতিবারে বৃহস্পতির আগমন—জ্ঞান, ধর্ম, গুরু ও শিক্ষা। অভি হঠাৎ করে নিজের জীবনদর্শন নিয়ে চিন্তায় পড়ে। সে একজন আধ্যাত্মিক গুরুর ভিডিও দেখে। তার মনে পড়ে, ছেলেবেলায় এক সাধুর কথা—“সত্য জানার চেষ্টা করাই প্রকৃত ধর্ম।” সে বুঝতে পারে বৃহস্পতি মানে অহংহীন শিক্ষা, সঠিক জ্ঞান।
শুক্রবার আসে শুক্রগ্রহের স্নিগ্ধতা নিয়ে—ভালোবাসা, শিল্প, রুচি ও সম্পর্ক। অভি নিজের ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে বসে। সে বুঝতে পারে, সম্পর্ক মানে শুধু আবেগ নয়, বরং মানসিক মাধুর্য। একটি পাত্র-পাত্রীর মিল বিশ্লেষণ দেখে সে বিস্মিত। সে উপলব্ধি করে, শুক্র মানে শুধু প্রেম নয়, মানসিক সৌন্দর্যের প্রকাশ।
শনিবারে শনির কঠিন পাঠ—দায়িত্ব, ধৈর্য, কর্মফল। অভি অফিসের টেবিলে বসে কাজের চাপ সামলাতে ব্যস্ত। তার মনে হয়, সে যেন নিজের ভাগ্যকে তৈরি করছে। সে বোঝে, শনি মানে শাস্তি নয়—জীবনের কঠিন পাঠ। অভি উপলব্ধি করে— এই দিন তার চরিত্র গড়ার দিন। বাংলা রাশিচক্র বিশ্লেষণ করে সে আশ্বস্ত হয়।
এই সাত দিনের ভেতর দিয়ে ‘অভি’ নিজের জীবনকে নতুনভাবে দেখতে শেখে। প্রতিটি দিনের পেছনের দেবতা ও মানসিকতা তাকে শেখায়—সময়ের রং বদলালেও আত্মার প্রশ্ন একই থাকে। সে উপলব্ধি করে, ভাগ্য মানেই সময়ের উপর জ্ঞান, আর জ্ঞান মানেই মুক্তি। সময়ের সাত রঙ মিলেই তৈরি হয় জীবনের মানচিত্র।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন